পড়াশুনায় কিভাবে মন বসবে How to study effectively
পড়াশোনায় মন বসানোর উপায়
![]() |
পড়ায় মন বসানোর সহজ উপায় |
ইতিমধ্যে এখনো যারা ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে, স্কুলে বা কলেজে পড়াশোনা
করেন তাদের প্রধান সমস্যা হলো একদম পড়াশোনার মাঝে মনে বসে না। তার মানে এই নয় যে
তারা পড়াশোনা করতে আগ্রহী না। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী চায় পড়াশোনা করে অনেক বড়
হতে, সবাই এই আশাটি মনের মাঝে পোষণ করে থাকেন।এমনকি প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রী চাই
পড়াশোনা করে ভালো রেজাল্ট করতে। জীবনে অনেক বড় হতে কে না চায় ? এলাকায় সবার সেরা হতে কে না চায় ? যখনই আমরা ভাবি যে পড়তে বসবো বা পড়তে বসেও যাই তখন আমরা
ভাবি সব সিলেবাস কম্প্লিট করে ফেলব।
কিন্তু কয়েক মিনিট পরে আমাদের সমস্ত ইচ্ছাশক্তি হারিয়ে যায়। কারণ পড়তে বসলেই আমাদের সমস্ত দুনিয়ার কথা মনে পরতে থাকে যেমন- আমাদের মনে হয় ফেসবুকের ফারজানাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলাম, অ্যাকসেপ্ট করলো কিনা একটু চেক করে দেখি, ফারজানাকে কি প্রপোজ করেই দেবো আজ ? নাহ। আমার পাবজি খেলাটা কেন খারাপ হয়ে যাচ্ছে ? আর চিকেন ডিনার কিছুতেই পেলাম না ,ফারজানা কে নিয়ে কোথায় যে ঘুরতে যাই, বাজেটও তো তেমন বেশি নেই । বাবার থেকে কিছু টাকা ম্যানেজ করতে হবে ।অর্থাৎ এইসব ভাবনার কথা বলতে শুরু করলে হয়তো আজকের লেখাটা সিনেমা নাটকের মত অনেক লম্বা হয়ে যাবে।
![]() |
পড়তে বসলেই ঘুম আসে কেন? |
এই সমস্ত চিন্তাভাবনা করতে
করতে আমাদের পড়া শুধু ভাবনার কল্পনার জগতে থেকে যাবে।
তারপর আমরা ভাবি দুর আজতো শুধু
ঘুম পাচ্ছে আর ভালো লাগছে না, কাল থেকে ঠিক ভালভাবে পড়াশুনা করবো।ঠিক এভাবে বছরের
পর বছর কেটে যায়, ছাত্র জীবন শেষ হয়ে যায়। তারপর বাস্তবে সামনে দাঁড়িয়ে মনে
পড়ে তখন যে কেনো একটু পড়লাম না।
আপনার যদি বর্তমানের এমন একজন ছাত্র বা ছাত্রী হয়ে থাকেন, আর যদি ভবিষ্যতে অন্যদের মতো আফসোস করতে না চান তাহলে যা কিছুই হোক না কেন আজকের এই লেখাটিকে একদম শেষ পর্যন্ত অন্তত পড়ুন। কেন বলছি এই কথা জানেন ? কারণ আপনার লাইফের কোন টার্নিং পয়েন্ট হয়ে যেতে পারে । যাদের একদম পড়তে ইচ্ছে করে না এমনকি যাদের পড়ায় মন বসে না । যারা আজ নয় কাল থেকে পড়বো ,এক্সামের আগে থেকে পড়বো, যারা প্রতিনিয়তই এই ধরনের অজুহাত দিয়ে যাচ্ছেন তাদের কাছে আমি জাস্ট একটি প্রশ্ন করব যে পড়াশোনা থেকে দূরে পালিয়ে, পড়াশোনা না করে , আলটিমেটলি আপনি কাকে ঢকাচ্ছেন ?
আপনার টিচার কে ? নিজেকে? আপনার মাকে ? বাবাকে ? হয়তোবা অনেকেই এই লেখাটি পড়ার পর বিরক্ত বোধ করছেন। আমার মনে হয় এই লেখাটা পড়া বাদ দিয়ে অন্য কিছু করবেন। কারণ সত্যটা শুনতে সবারই খারাপ লাগে আর সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার সাহস থাকে না। যদি আপনার সাহস থাকে বাস্তবের সম্মুখীন হওয়া, একবার চিন্তা করে দেখুন পড়াশোনা করলে আসল লাভটা কার। আপনার বাবা-মায়ের , আপনার টিচারের নাকি আপনার নিজের।
কিভাবে বেকারত্ব অভিশাপ থেকে মুক্তি
পড়াশোনা করার জন্য একজন মানুষের জীবনে কতটুকু সময়লাগে পনের, ষোল, সতের বছর আর তার মধ্যে বেশির ভাগটাই তো আপনি পার করে এসেছেন। আর বাকি কয়টা বছর দেখতে দেখতে কেটে যাবে তারপর হাজার চেষ্টা করলেও আপনি কখনো আর স্কুল জীবনে ফিরে আসতে পারবে না।হ্যাঁ আমি জানি পড়াশোনা অনেকটা বোরিং লাগে, ম্যাক্সিমাম ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করতে ইচ্ছা করে না।পড়তে বসলে ঘুম পায়,অনেক সময় তাদের কাছে মনে হয় কবে যে এই পড়াশোনার জীবন থেকে মুক্তি পাবো।কবে যে আমার ছাত্র জীবন টা কাটবে।
যেহেতু আপনি ভাবছেন কাটাতেই
যেতে হবে তাহলে আপনি একটু কষ্ট করে পড়ে কাটালে ক্ষতি কি ? ফেসবুক,ফেসবুক
মেসেঞ্জার সোশ্যাল মিডিয়াতে আড্ডামারা, মেয়েদের ইমপ্রেস করা, গেম খেলা, ক্রিকেট
খেলা দেখা, এসবকিছুর জন্যই আপনার কাছে এখনো পুরো জীবনটাই বাকি আছে । কিন্তু
ছাত্রজীবনটা একবার পেরিয়ে গেলে আর ফিরে আসবেনা ।ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেখে লাইক
কমেন্ট করে বা মেয়ে পিচনে পরে থেকে অথবা টিভি দেখে সময় কাটিয়ে আপনি জীবনে কোনো
কিছু অর্জন করতে পারবেন না। কিন্তু পড়াশোনা করে অবশ্যই পারবেন।
অনেকেই হয়তো পড়াশোনার জন্য
কোন ধরনের মোটিভেশন পাচ্ছেন না ।আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনি একবার কল্পনা
করে দেখুন তো আপনি যদি পড়াশোনা করেন টপ লেভেলে পৌঁছাতে পারেন এমনকি ভালো মার্ক
নিয়ে পাস করেন , আপনার মা কতটা খুশি হবেন।আপনার বাবা গর্বের সঙ্গে আপনার কথা
অন্যদের সাথে বলতে পারবেন ।আজকে যারা আপনাকে অসম্মান করছে তারা কতটা সম্মান করবে।
আপনি একবার ভেবে দেখেছেন আপনি যখন পড়াশোনা করে নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে যাবেন তখন
কত মানুষের জীবন গড়তে পারবেন।
তারপরেও যদি মোটিভেশন না পেয়ে থাকেন তাহলে একদিন আপনি সেই রাস্তা দিয়ে চলুন, যেখানে এমন কিছু মানুষ থাকে যারা দু'বেলা পেট ভরে খেতেও পায় না , যাদের থাকার জন্য নেই কোনো বাড়ি,যাদের শৈশব কেটে যায় ফুটপাতে, তাদের কাছে এই পড়াশোনা করাটা আনেক বড় স্বপ্নের ব্যাপার । তাদের ইচ্ছাশক্তি থাকার পরেও তারা চাইলেও করতে পারছে না পড়াশোনা।
কিন্তু আপনার বাবা-মা তো আপনাকে কোন অভাবই রাখে না। তাহলে আপনি কেন সময় নষ্ট করছেন ? নিজেকে প্রশ্ন করে দেখুন। পড়াশোনার জান লাগিয়ে দেওয়ার জন্য সবথেকে ভাল সময় কোনটা জানেন ? আজকেই। সেইজন্য আজকে থেকে পড়াশোনা শুরু করে দিন। নিজের সেরাটা লাগিয়ে নিন। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে প্রশ্ন করুন যে আর কোনদিনও নিজেকে ঠকাবোনা ।পড়াশোনা করতে বোরিং লাগছে? তাহলে পড়াশোনা কে আরো ইন্টারেস্টিং করতে রাস্তা নিজেকে খুঁজে বের করুণ। আপনার মোবাইল আপনার টাকার বিনিময়ে কেনা ইন্টারনেটকে নিজেদের তৈরি করার কাজে ব্যবহার করুন।যদি পড়তে বসলেই আপনার ঘুম পায় তাহলে চোখে মুখে পানি দিয়ে এসে আবার বসে পড়তে বসুন।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, গেম, টিভি, ক্রিকেট খেলা, এসব থেকে অনেক দূরে থাকার চেষ্টা করুণ। ফেসবুক গার্লফ্রেন্ড এসবে কথা মনে পড়ছে ? মোবাইল অফ করে দূরে সরিয়ে রাখুন। আজ থেকে নতুন কিছু শেখার জন্য নিজেকে গড়ে তোলার জন্য পড়ুন। আপনার মায়ের মুখের হাসি ফোটানোর জন্য পড়ুন। বাবার পরিশ্রমের দাম দেওয়ার জন্য পড়ুন। দেশের জন্য কোন কিছু করে দেখানোর জন্য পড়ুন। আপনি মাথায় রাখুন সেই দিনটির কথা যে দিনটি আসবে মাথা উঁচু করে ফ্যামিলির সবার সামনে দাঁড়াতে পারবে।
আপনার মায়ের চোখে থাকবে
আনন্দের জল মুখে তৃপ্তির হাসি । যখন আপনার জন্য আপনার বাবার মাথা করবে সবার উঁচু
হয়ে থাকবে। একবার ভেবে দেখুন তো তখন আপনার কেমন লাগবে? আপনি কি চান না সেই দিনটি
সত্যি করতে ? সেই খুশিটা অনুভব করতে, তাই সেই দিনটির জন্য আজকে থেকেই পড়ুন নিজের
সেরাটা দিয়ে মনোযোগ সহকারে পড়াশোনা চালিয়ে যান একদিন সফলতা আসবেই।আর যদি বোরিং
লেখাটা এখনো পড়ছেন তাহলে আপনাকে বদলানো এবং সে খুশির দিন টিকে দেখা ক্যাপাচিটি
রয়েছে। শুধু একবার চেষ্টা তো করে দেখুন ।
কোন মন্তব্য নেই